বিভিন্ন ভাষায় ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র দখল ছিল অসাধারণ ও অসামান্য। উর্দু ভাষার অভিধান প্রকল্পে তিনি সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। পরে পূর্ব পাকিস্তানি ভাষার আদর্শ অভিধান প্রকল্পের সম্পাদক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬১ – ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির ইসলামি বিশ্বকোষ প্রকল্পের অস্থায়ী সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক গঠিত বাংলা একাডেমির পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন।
বাংলা সন যেহেতু হিজরি সালের পিছন পিছন এগিয়ে যায়, তাই চন্দ্র ও সৌর বছরের মাঝে সময়ের একটা পার্থক্য থেকেই যায়। এই সমস্যা নিরসনের জন্য ১৯৬৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারী বাংলা একাডেমীর তত্ত্বাবধায়নে ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র নেতৃত্বে বাংলা সনে একটু পরিবর্তন আনা হয়। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়।
পরিবর্তন অনুযায়ী বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত প্রত্যেক মাস কে ৩১ দিন এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত ৩০ দিনের হিসাবে গননা করা শুরু হয়। এছাড়া চার বছর পর পর ফাল্গুন মাসকে এক দিন বাড়িয়ে ধরা হয় শুধুমাত্র লিপ-ইয়ারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য।
বহু ভাষাবিদ, পণ্ডিত ও প্রাচ্যের অন্যতম সেরা ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান। জাতিসত্তা সম্পর্কে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র স্মরণীয় উক্তি- ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙ্গালি।’