মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে কাচিন বিদ্রোহীদের সাথে সেনাবাহিনীর সংঘাত দীর্ঘদিনের। পশ্চিমাঞ্চলে রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে কাচিনদের খবর সম্প্রতি খুব একটা নজরে আসেনি। কিন্তু হঠাৎ করে সেখানে যুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেস আর্মির যোদ্ধাদের অবস্থানগুলোর ওপর বিমান হামলা এবং কামানের গোলাবর্ষণ করছে বলে জানা যায়।
কাচিন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। জাতিসংঘ সূত্র অনুযায়ী, এ বছর অন্তত দশ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই সেখান থেকে পালিয়েছে প্রায় চার হাজার।
খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী কাচিন জনগোষ্ঠী ১৯৬১ সাল থেকে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে স্বায়ত্বশাসিত এলাকা প্রতিষ্ঠার দাবিতে লড়াই করে যাচ্ছে। কেআইএ বিদ্রোহীদের হাতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র আছে এবং তারা অন্যতম শক্তিশালী একটি বিদ্রোহী গ্রুপ বলে মনে করা হয়।
জানা গেছে, গত কিছুদিনে পরিস্থিতি গুরুতর রূপ নিয়েছে। এই লড়াইয়ে সরকারি সেনারা কাচিন যোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করে তাদেরকে সীমান্ত এলাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কাচিন এলাকাগুলোয় বিচার-বহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতার মতো ঘটনা সাম্প্রতিককালে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য এবং ত্রাণ যেতে না দেয়ার জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সূচির সমালোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কর্মীরা তাদেরকে সেখানে যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্যে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এতো তীব্র সংঘর্ষ আর কখনো হয়নি। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, এই যুদ্ধের কারণে উত্তর মিয়ানমারে সোয়া এক লাখের মতো মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছে।