বাংলাদেশের দেয়া ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা থেকে যাচাইকৃত ১ হাজার ১০১ জনকে দিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় মিয়ানমার। পাশাপাশি আগের ধাপে যাচাইকৃত ৭৭৮ জন মুসলিম ও ৪৪৪ জন হিন্দু রোহিঙ্গাদেরও ফেরত নেয়ার আগ্রহ জানিয়েছে দেশটি।
বাংলাদেশ তাদের ‘যাচাইযোগ্য তথ্যের’ ওপর জোরারোপ করেছে। যাতে এই তথ্যের ভিত্তিতে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জারি রাখে। এতে করে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে।
বাংলাদেশ চায় মিয়ানমার সরকার যেন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাসহ ‘অনুকূল পরিবেশ’ তৈরি করে। তাদের গ্রামগুলো পুনর্গঠন, জীবিকার প্রবেশাধিকার, আন্দোলনের স্বাধীনতা ইত্যাদি যেন নিশ্চিত করে।
মিয়ানমারের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী,বৃহস্পতিবার ঢাকায় দ্বিতীয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকের পর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তারা বাংলাদেশ থেকে যাচাইকৃত রোহিঙ্গাদের গ্রহণে প্রস্তুত।
বৈঠকে উভয় পক্ষ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে মত-বিনিময় করেছে। প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি, তাদের মধ্যে আস্থা নির্মাণ, জাতিসংঘের সংস্থার প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
এদিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমার। এছাড়া বাংলাদেশের ট্রানজিট ক্যাম্পের সমাপ্তি, উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের মাঝে সচেতনতার প্রচার, যাচাই ফরম দেয়া প্রভৃতি করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানায় মিয়ানমার।
জেডব্লিউজি এর বৈঠকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদার সাথে ও টেকসই প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা করে উভয় পক্ষ।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতির বিষয়ে এবং দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পর্কে মত বিনিময় করা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষ ন্যাশনাল ভ্যারিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের দ্রুত এনভিসি কার্ড দেয়া হবে, যার মাধ্যমে রাখাইন রাজ্যে তারা চাকরি করতে পারবে।
উভয় পক্ষ শিগগিরই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করতে সম্মত হয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের সকল বাধা দূর করতে একযোগে কাজ করার কথা জানায় তারা।
তৃতীয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক মিয়ানমারের নাইপেদোতে অনুষ্ঠিত হবে। তারিখ ও ভেন্যু এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
(সূত্রঃ ইউএনবি)