ইরানি সিনেমার বাংলাদেশে শুটিং সহযোগীতায় রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড

ফিচার বিনোদন

‘রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড’ এর সার্বিক সহয়োগীতা ও তত্বাবধানে গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে শুরু হয় ইরানি ছবি “শাবি কে মহ কমেল শোদ” এর শুটিং। ইরানের বিখ্যাত পরিচালক নার্গিস আবইয়ারের পরিচালনায় ছবিটির বিশেষ কিছু অংশের দৃশ্যধারন করা হয়েছে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। জানা যায়, ছবিটির ২০ ভাগ শুটিং বাংলাদেশে সম্পন্ন করা হয়েছে।

‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’, যার বাংলায় অর্থ দাঁড়ায় ‘যে রাতে চাঁদ পূর্ণতা পেয়েছিল’। রোমান্টিক ধাঁচের ছবিটিতে অভিনয় করছেন ইরানের বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। ছবিটিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করছেন এলনাজ শাকেরদুস্ত এবং নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হুতান শাকিবি।

বাংলাদেশে ছবিটির দৃশ্যায়ন করতে গত ৩ আগস্ট পরিচালক নার্গিস আবইয়ার, প্রধান চিত্রগ্রাহক সামান লুথফিয়ান ও প্রধান সহকারী পরিচালক রুজবে সাজ্জাদী সহ ৬ জনের নির্মাতা দল ঢাকায় পৌঁছান। নির্মাতা দলে ছবিটির সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে যুক্ত হন আবদুর রহিম। পরদিন থেকেই শুরু হয় ব্যাস্ত নগরী রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন লোকেশন ঘুরে দেখা।দেখে দেখে বাংলাদেশের নিজস্ব ঐতিয্য ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ততা আছে এমন অনেকগুলো স্থান নির্বাচন করেন তাঁরা।

৬ আগস্ট মঙ্গলবার নায়ক, নায়িকা, এমনকি শিশুবাচ্চা সহ আরো ১৭ জন ঢাকায় পৌঁছান। পরদিন খুব সকাল থেকেই শুরু হয় শুটিং। ব্যাস্ত নগরীর ব্যাস্ত জায়গা কারওয়ান বাজার। প্রচন্ড রোদ আর গরমে অতিথিরা সবাই তখন নতুন পরিবেশে খানিকটা হিমশিম খাচ্ছিলেন। কিন্তু পরিচালক ছিলেন নাছোড়বান্দা। রোদ, বৃষ্টি, রাস্তার জ্যাম সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, বসিলা, ধানমন্ডি, রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ, হাতিরঝিল সহ ছবির গল্পের সাথে সম্পৃক্ত থাকা নির্বাচিত স্থানগুলোতে একের পর এক ছুটেছিল ক্যমেরা।

বাংলাদেশে ইরানের ছবিটি শুটিং করার বিষয়ে ইরানিদের অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি বিভাগের শিক্ষক ড: মুমিত আল রশিদ। ছবিটির উপদেষ্টা ড: মুমিতের তত্বাবধানে ইরানি ছবির দলটি ঢাকায় আসে। সিনেমার শুটিং চলাকালীন সময়েও ড: মুমিতকে প্রতিটি মূহুর্তে প্রাণবন্ত দেখাচ্ছিল।

ছবিটির বাংলাদেশ অংশের পরিচালনার জন্য সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন বাংলাদেশের তরুণ পরিচালক আবদুর রহিম। তাঁর শিল্প নৈপুণ্যে পরিচালক নার্গিস আবইয়ার খুব সহজেই তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। টেকনিক্যাল টিমের সকলের কাছে একটি কথাই বারবার শোনা যাচ্ছিল তখন, “ইটস ইমপসিবল টু শুট উইদাউট রহিম”। প্রধান সহকারী পরিচালক রুজবে প্রতিটি শট নেয়ার পরপরই বারবার এসে আবদুর রহিমকে উচ্ছ্বাসে জড়িয়ে ধরছিলেন।

‘রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড’ এর পক্ষ থেকে সিনেমার শুটিং এর সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন ‘রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড’ এর ডিরেক্টর মাহফুজুর রহমান। ছবিটিতে বাংলাদেশ অংশের সহকারী প্রযোজক হিসাবে ছিলেন প্রযোজক বিধান বাবু।

ফার্সি ভাষার ছবিটিতে টেকনিক্যাল টিম ও অন্যান্য কলাকুশলীরা প্রায় সবাই ফার্সি ভাষায় কথা বলায় তাদের জন্য ৮ জন দোভাষী সর্বদা সহযোগী ভূমিকা পালন করেছেন।

এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড’ ইরানের দলটিকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে।

“শাবি কে মহ কমেল শোদ” ছবিটির শুটিং শেষে বাংলাদেশ সম্পর্কে পরিচালক নার্গিস আবেইয়ার বেঙল বার্তাকে জানিয়েছেন, “বাংলাদেশে এসে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। শুটিং করতে আমাদের কোন জায়গায় কোন ধরনের সমস্যা হয়নি। বাংলাদেশে ‘রেইডাস ইন্টাঃ লিমিটেড’ এর অতিথিপনায় আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতে আমরা বাংলাদেশে আরো বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।” কাজ শেষে একে একে দলের সবাই ইরানের পথে যাত্রা শুরু করলে সর্বশেষ ১৫ই আগস্ট বিদায় নেন পরিচালক নার্গিস আবেইয়ার। যাবার সময় এয়ারপোর্টে আবেগাপ্লুত কন্ঠে একটি শব্দই বারবার বলছিলেন, ‘খোদা হাফেজ’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *