কারফ্রি সিটি’স এলায়েন্স বাংলাদেশ, ইন্সটিটিউট অব ওয়েলবিইং ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্ট এর উদ্যোগে আজ ২১ জানুয়ারি ২০১৯ সকাল ১১.০০ টায় জহুর হোসেন চৌধুরী হল, জাতীয় প্রেসক্লাবে “পার্কলেট প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের চেয়ারম্যান স্থপতি মীর মোবাশ্বের আলী, পাবলিকপ্লেস বিশেষজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ সোহেল রানা, রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ সাঈদ রেজাউল হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানাসের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং এর নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফ্রইমসন।
পার্কলেট ডিজাইন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মৌকুড়ি মুহিম, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন যৌথভাবে বুয়েটের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রত্যয় রায় ও সৃষ্টি রায় চৌধুরী, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন বুয়েটের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুর জামান পান্ত ও মোহাম্মদ সাকলাইন মোস্তাক।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, মানুষ যন্ত্র নয়, তার বেঁচে থাকার জন্য বিনোদনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু আমরা শহরের মানুষের বিনোদনের প্রাধাণ্য দিচ্ছি না। ফলে মানুষ ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। শহরের মানুষের মাঝে আরো বেশি আন্তরিকতা ও সংযোগ তৈরি করার জন্য গাড়িকেন্দ্রীক পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এবং মানবিক শহর গড়তে আমাদের আরো বেশি উন্মুক্ত স্থান তৈরি করতে হবে।
ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং এর নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফ্রইমসন তাঁর প্রবন্ধে বলেন, আমরা গাড়ির জন্য পার্কিংয়ের স্থান দিতে গিয়ে বিনোদন ও শিশুদের খেলার জায়গা নষ্ট করছি। শহরে শিশুরা খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাচ্ছে না। ফলে শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। শিশুদের সামাজিকীকরন ও বিনোদনের জন্য শহরগুলোতে প্রচুর পরিমাণ পার্কলেট গড়ে তুলতে হবে।
মীর মোবাশ্বের আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন, পার্কলেট একটি সুন্দর ও মনোরম বিনোদনের জায়গা, যেখানে কমিউনিটি সবাই ছোট পরিসরে পার্কলেট ঘরে তুলে সুন্দর বিনোদনের পাশাপাশি আমাদের শহরকে আরো সুন্দর করে ঘরে তুলতে পারে।
সাঈদ রেজাউল হক বলেন, ঢাকায় বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষ অস্থিরতায় ভোগে। এ সমস্যার অন্যতম কারণ বিনোদনের অভাব। আমাদের বিনোদনের যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা নেই। আমরা সবুজ থেকে বঞ্চিত। যে পার্ক ও খেলার মাঠ আছে, তা জনসংখ্যার তুলনায় অতি নগণ্য। সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় বাচ্চারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই নিজ কমিউনিটির মধ্যে পার্কলেট গড়ে তুলে বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, পৃথিবীর পরিকল্পনা এখন পাল্টিয়েছে। পরিকল্পনা হয় এখন মানুষকেন্দ্রিক। কিন্তু আমরা এখনও গাড়িকেন্দ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে আছি। এই পরিকল্পনা আমাদের ক্রমেই যান্ত্রিক করে তুলছে। আমাদের পরিকল্পনায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা করা উচিৎ। ঢাকার এখন যেভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে তা সকলকে অসুস্থ করে তুলবে।
সোহেল রানা তাঁর বক্তব্যে বলেন, শুধু খেলার মাঠ পার্ক এগুলো পাবলিক প্লেস নয় । যেখানে সর্বসাধারণের অবাধ যাতায়াত আছে সেই সকল জায়গা’ই পাবলিক প্লেস। আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে হলে সুস্থ বিনোদনের প্রয়োজন। তাই নগরগুলোতে মানুষের বিনোদনের জন্য আরো সুযোগ তৈরি করতে হবে। শহরের পার্কলেট তৈরি করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা যায়।
শান্তুনু বিশ্বাস
প্রোগ্রাম র্অগানাইজার
কারফ্রি সিটি’স এলাইয়েন্স বাংলাদেশ