কারফ্রি সিটি’স এলায়েন্স বাংলাদেশ, ইন্সটিটিউট অব ওয়েলবিইং, সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিস ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্ট এর উদ্যোগে আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ দুপুর ০২.৩০ থেকে বিকাল ৫.০০ টা র্পযন্ত মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটির ২নং সড়কে যান্ত্রিক যান মুক্ত রেখে শিশুদের খেলাধুলা, সাইক্লিং, স্কেটিং সহ সব বয়সের মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়।
উক্ত প্রোগ্রামে উপস্থতি ছিলেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবির, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং এর ভারপ্রাপ্ত নিবাহী পরিচালক দেবরা ইফ্রইমসন, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার শান্তনু বিশ্বাস এবং পিপলস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।
গাউস পিয়ারী বলেন, মানুষ যন্ত্র নয়, তার বেঁচে থাকার জন্য বিনোদনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু আমরা শহরের মানুষের বিনোদনে প্রাধান্য দিচ্ছি না। ফলে মানুষ ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। শহরের মানুষের মাঝে আরো বেশি আন্তরিকতা ও সংযোগ তৈরি করার জন্য গাড়ি কেন্দ্রিক পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে, মানবিক শহর গড়তে আমাদের আরো বেশি উন্মুক্ত স্থান তৈরি করতে হবে।
দেবরা ইফ্রইমসন বলেন, আমরা গাড়ির জন্য পার্কিং এর স্থান দিতে গিয়ে বিনোদন ও শিশুদের খেলার জায়গা নষ্ট করছি। শহরে শিশুরা খেলাধূলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাচ্ছে না। ফলে শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। শিশুদের সামাজিকীকরন ও বিনোদনের জন্য শহরগুলোতে প্রচুর পরিমাণ গাড়িমুক্ত সড়ক গড়ে তুলতে হবে।
নাজনীন কবির বলনে, গাড়িমুক্ত সড়কই যে একটি সুন্দর ও মনোরম বিনোদনের জায়গা হতে পারে তা হয়তো অনেকে ভাবতেও পারেননি। অথচ, কমিউনিটির সবাই ইচ্ছে করলে কলোনীর দুই দিকের গেইট বন্ধ রেখে শিশুদের খেলার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। এইভাবে সুন্দর বিনোদনের পাশাপাশি আমাদের শহরকে আরো সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব।
শান্তনু বিশ্বাস বলেন, ঢাকায় বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষ অস্থিরতায় ভোগে। এ সমস্যার অন্যতম কারণ হল বিনোদনের অভাব। আমাদের বিনোদনের যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা নেই। আমরা সবুজ থেকে বঞ্চিত। যে পার্ক ও খেলার মাঠ আছে, তা জনসংখ্যার তুলনায় অতি নগণ্য। সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় বাচ্চারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই নিজ কমিউনিটির মধ্যে এইভাবে মাঝেমধ্যে যান্ত্রিক যান বন্ধ রেখে বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারে।
হাউজিং সোসাইটির একজন বলনে, পৃথিবীতে পরিকল্পনার ধরণ এখন পাল্টিয়েছে। পরিকল্পনা হয় এখন মানুষ কেন্দ্রিক। কিন্তু আমরা এখনও গাড়ি কেন্দ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে আছি। এই পরিকল্পনা আমাদের ক্রমেই যান্ত্রিক করে তুলছে। আমাদের পরিকল্পনাগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত। ঢাকার এখন যেভাবে পরিকল্পনা হচ্ছে তা সকলকে অসুস্থ করে তুলবে।
উল্লেখ্য, প্রতি মাসের ৩য় শনিবার মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে গাড়িমুক্ত সড়ক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।