মি. ট্রাম্প, আমাদের জানতে কারবালার ইতিহাস পড়ুন : ইরান
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তার মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে কড়া বার্তা দিয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনীর (ইরান মিলিটারি) ফেসবুক পেজ এবং ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট।
বার্তায় লেখা হয়, ‘মি. ডোনাল্ড ট্রাম্প! আপনি যদি না জানেন আমরা কারা, তাহলে কারবালার ইতিহাস পড়ে দেখুন।’ এই বার্তাটি ইরানের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় আত্মত্যাগের প্রতীক কারবালার যুদ্ধকে উল্লেখ করে, যা দেশটির প্রতিরোধের দৃঢ়তা ও আত্মমর্যাদার প্রতিফলন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এটিকে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি সরাসরি কূটনৈতিক ও সামরিক বার্তা হিসেবেই দেখছেন।
অন্যদিকে, স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ জুন) ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি সতর্কবার্তায় বলেন, ‘সবারই অবিলম্বে তেহরান ছেড়ে যাওয়া উচিত!’ যদিও তিনি কেন এমন পরামর্শ দিলেন, তা স্পষ্ট করেননি।
ট্রাম্প আরও বলেন, “ইরানকে যে ‘চুক্তি’ স্বাক্ষর করতে বলেছিলাম, তাতে স্বাক্ষর করা উচিত ছিল। কী লজ্জাজনক এবং মানব জীবনের অপচয়। সহজভাবে বলতে গেলে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না, আমি বারবার বলেছি!”
বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্পের এই বক্তব্যই ইরানের কড়া বার্তার পেছনে মূল প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করেছে। এই পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধাবস্থার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন ভোরে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি, আইআরজিসি প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। একই হামলায় ইরানের শীর্ষ ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীরও মৃত্যু ঘটে।
এই হামলার পর ইরান থেকে পাল্টা প্রতিশোধের ঘোষণা আসে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালানো হয়। এরপর থেকেই দুই দেশ একে অপরের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের এমন জড়িত অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।