খেলা

ক্লাব বিশ্বকাপে ‘বুড়ো হাড়ের ভেলকি’: রামোস–সিলভা–ফাবিওর দুর্দান্ত প্রদর্শনী

পদার্থের নিয়মে বয়স বাড়লে শক্তি কমে, গতি কমে, তেজও কমে। কিন্তু ফুটবলের মাঠে এই নিয়ম যেন ভুল প্রমাণ করলেন তিন প্রবীণ যোদ্ধা—থিয়াগো সিলভা, সের্হিও রামোস ও গোলরক্ষক ফাবিও। ক্লাব বিশ্বকাপে গতরাতের ম্যাচে নিজেদের অটুট রক্ষণভাগ দিয়ে তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, বয়স শুধুই একটি সংখ্যা!

ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের হয়ে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছেন সিলভা ও ফাবিও। অন্যদিকে, মেক্সিকোর ক্লাব মন্তেরেইর হয়ে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গোল করে আলো ছড়িয়েছেন রামোস।

ফ্লুমিনেন্সের রক্ষাকবচ: সিলভা ও ফাবিও

বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে অনেকেই এই ম্যাচে ফেভারিট ধরেছিলেন। কিন্তু মাঠে আধিপত্য দেখিয়েছে ফ্লুমিনেন্সই। বিশেষ করে দলের রক্ষণভাগের দুই স্তম্ভ থিয়াগো সিলভা ও ৪৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক ফাবিও ছিলেন অবিচল।

৪০ বছর বয়সী সেন্টার ব্যাক সিলভা পুরো ম্যাচে ডুয়েল জিতেছেন ৯ বার, ৭টি বল ক্লিয়ার করেছেন, ৮টি এরিয়াল বল নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। ডর্টমুন্ডের ফরোয়ার্ডদের একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি।

তবে সিলভা একাই যথেষ্ট ছিলেন না। শেষ প্রহরী হিসেবে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ফাবিও। বয়স ৪৪ হলেও গোলপোস্টের নিচে তাঁর তৎপরতায় ছিল তরুণের ছাপ। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেছেন, যার মধ্যে দুটি ছিল ডাইভিং সেভ। বল পুনরুদ্ধার করেছেন ৮ বার। ফ্লুমিনেন্সের ডিফেন্সিভ লাইন যেন এই দুই অভিজ্ঞ যোদ্ধার হাতেই ছিল সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত।

আক্রমণেও অনন্য রামোস

অন্যদিকে, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে মাঠে নামা সের্হিও রামোস যেন বয়সকে উপহাস করে গেলেন আরও একবার। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করে মন্তেরেইকে এগিয়ে দেন ৩৯ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কিংবদন্তি। যদিও লাওতারো মার্তিনেজের গোলে ইন্টার পরে সমতা ফেরায়, শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ হয় ১–১ সমতায়।

গোল ছাড়াও রক্ষণে রামোস ছিলেন দুর্দান্ত। ম্যাচে ৩৪টি পাসের মধ্যে ৩১টিই সফলভাবে সম্পন্ন করেন। ১১টি বল ক্লিয়ার, ২টি ব্লক এবং ৪টি ডুয়েল জয়ের মাধ্যমে নিজেকে আবারও প্রমাণ করলেন।

বয়স নয়, হৃদয় দিয়ে খেলে যাচ্ছেন

রামোস–সিলভা–ফাবিওরা দেখিয়ে দিলেন, শুধু পেশি নয়, অভিজ্ঞতা, ট্যাকটিকস আর মনোবলের ওপর ভর করে কীভাবে খেলার গতিপথ পাল্টে দেওয়া যায়। ক্লাব বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোতেও এই তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের দিকে থাকবে ভক্তদের বিশেষ নজর। আর তাঁরা যদি এমন ‘বুড়ো হাড়ের ভেলকি’ দেখাতে থাকেন, তাহলে এই বিশ্বকাপে চমকের শেষ থাকছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *