বিশ্ব

পুতিনের ঘোষণা: ‘আমরা ইরানকে কখনও ছেড়ে যাব না’

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়া কখনোই ইরানকে ছেড়ে যাবে না। বৃহস্পতিবার ১৯ জুন টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে (SPIEF) এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, “আমাদের বিশেষজ্ঞরা ইরানের বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় কাজ করছেন, সংখ্যায় প্রায় ২৫০ জন। অন্যান্য প্রকৌশলী ও ব্যবসায়ীসহ এই সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আমরা কখনোই ইরানকে ছেড়ে যাব না।”

তিনি জানান, রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা বর্তমানে ইরানের বুশেহার শহরে দুটি নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে নিয়োজিত আছেন। রাশিয়া চায় ইরানের ইউরেনিয়াম কেবল শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হোক, এবং সে জন্য প্রয়োজন হলে রাশিয়া নিজেই পরমাণু কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করতে প্রস্তুত।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “ইরানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছি— ইরান চাইলে আমরা তাদের পরমাণু প্রকল্পের দায়িত্ব নিতে পারি। তবে সবকিছু ইরানের সম্মতির ওপর নির্ভর করছে।”

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের কূটনৈতিক ভূমিকার প্রশংসা করে পুতিন বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এরদোয়ানের মধ্যস্থতাকে রাশিয়া গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

ইসরায়েলের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইরানের নিরাপত্তা এবং ইসরায়েলের উদ্বেগ— উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে ইরান পরমাণু শক্তি ব্যবহার করুক, এবং একই সঙ্গে ইসরায়েল যেন আতঙ্কিত না হয়— এই দুই বিষয় একসঙ্গে সমাধান করা সম্ভব।”

ইসরায়েল যদি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করে, এমন প্রশ্নে পুতিন সরাসরি মন্তব্য না করে কৌশলীভাবে বলেন, “আমি শুধু শুনছি, তবে এই বিষয়ে কোনো আলোচনা করতে চাই না।”

অস্ত্র চুক্তি বিষয়ে পুতিন জানান, জানুয়ারিতে রাশিয়া ও ইরান একটি চুক্তি করেছে, তবে তাতে অস্ত্র সরবরাহের কোনো বিষয় নেই এবং ইরান এখনও রাশিয়ার কাছে অস্ত্র চায়নি।

তিনি আরও বলেন, “ইরানে বর্তমানে একটি জটিল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চলছে। তবে দেশটির জনগণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের চারপাশে ঐক্যবদ্ধ। আলোচনার পথ খোলা রাখা উচিত এবং দু’পক্ষের স্বার্থ বিবেচনায় রেখেই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই বক্তব্য শুধু ইরানের প্রতি রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনের বার্তাই নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার কৌশলগত অবস্থানকে আরও জোরালো করার একটি স্পষ্ট প্রয়াস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *