ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা নিয়ে যা জানা যাচ্ছে
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বোমা হামলা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতের মধ্যে এই হামলা নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
এক সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আজ রাতের টার্গেট ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে প্রাণঘাতী। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তি না আসে, আরও আঘাত আসবে – নির্ভুল নিশানা, গতি এবং দক্ষতায়।”তিনি আরও জানান, মার্কিন লক্ষ্যগুলো এখনো শেষ হয়নি।
মার্কিন বোমা হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তিনটি কেন্দ্র – ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান। এর মধ্যে ফোর্দো ইরানের দক্ষিণে পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা এতটাই গভীরে যে এটিকে ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন।
সেই লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করেছে তাদের শক্তিশালী ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা – GBU-57 ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (MOP)। প্রতিটি লক্ষ্যবস্তুর জন্য দুটি করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সামরিক সূত্র।
সংঘাতের সূচনা গত ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আকস্মিক বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, তারা ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নস্যাৎ করতেই হামলা চালিয়েছে।
এর জবাবে তেহরান শত শত রকেট ও ড্রোন ইসরায়েল অভিমুখে ছুড়ে মারে। এরপর থেকে দুই দেশই দফায় দফায় আকাশপথে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তার দাবি, ওই স্থাপনাগুলো “পূর্বেই খালি করে ফেলা হয়েছিল” এবং “বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি”।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।” তবে মার্কিন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মার্ক কিমিট বিবিসিকে বলেন, “চিরতরে ধ্বংস হয়েছে বলা যায় না।”
ইরান আগেই সতর্ক করেছিল, যেকোনো মার্কিন হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ধারণা করা হচ্ছে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত সামরিক ঘাঁটিগুলোকেই পাল্টা লক্ষ্য করতে পারে।